Soul 2020 – Animation Film Review
Name : Soul
Directed By : Pete Doctor
Rating : 10/100
Oh My Dog! Sorry, Oh! My Cat। আমার এনিমেশন, ফিল্ম দেখার তেমন একটা অভ্যাস নেই। তারপরও মাঝে মাঝে টুকটাক কিছু দেখি যখন যেটা ভালো লাগে। ২-৩ বছর বাদে একটা মারাত্মক, হৃদয় কামড়ানো এনিমেশন ফিল্ম দেখলাম। টোটালি হোলিস্টিক একটা এনিমেশন। এটা এমন একটা এনিমেশন যে জীবন প্রবাহে যত আপনি এগোবেন বারবার দেখায় এটা নতুন হয়ে ধরা দিবে আপনার। আমার কাছে অন্তত তাই মনে হলো দেখে।
বেশ কিছু ফিলোসফিক্যাল টার্ম আছে। সেইসাথে বেশ হিউমার এলিমেন্টও আছে। এনিমেশনটিতে
গভীর ব্যাপারের সাথে সিম্পলিসিটির দারুণ একটা সমন্বয় লক্ষ্য করলাম। আর এটাই এই এনিমেশনের সৌন্দর্যতা। এর পাশাপাশি এনিমেশনের কোয়ালিটি, একেকটা জিনিসকে যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছে তা অসাধারণ।
বিশেষ করে জো-এর শরীরে যখন অনভিজ্ঞ জীবনে আসার অর্থহীন ধারণা নিয়ে বসে থাকা শিশু আত্মাটির প্রবেশ ঘটে ও জীবনের এই বিচিত্রতা অবলোকন করতে করতে একটি সিড়িতে এসে বসার পর তার হাতে যখন পাতার কুঁড়ি ঝরে এসে পড়ে এবং সেখান থেকেই যখন তার অর্থের সূচনা ঘটে সেই দৃশ্যটি অতি মনোহর।
এছাড়াও শেষ দৃশ্যে জো-একটি বিখ্যাত ব্যান্ডদলে যখন পিয়ানো বাজানোর সুযোগ পায় ও তাতে সার্থক হয়ে যায় তখন সমস্ত আশা পূরণ হবার পর খালি রুম ও পিয়ানো সামনে বসে এনিমেশনটিতে যে আবহের তৈরী করা হয়েছে তা আপনাকে হৃদয়ের গহীনে প্রচন্ড ধাক্কা মারবে। এই দৃশ্যটিতে এসে মনে হয়েছে কোথায় যেন একটা বাড়ি খেয়ে গেলাম। হৃদয়ে একটা মোচড় অনুভব করলাম।
সেইসাথে মনে হতে লাগল জীবনের সমস্ত অসাধারণত্ব অর্জিত হবার পর সেগুলোকে বিসর্জন দিয়ে দিতে হয় ও অস্তিত্বকে হয়তো এভাবে বলতে হয় – নাও যতটুকু পেরেছিলাম অর্জন করেছি, সব নিয়ে নাও, আমাকে আবার সরল করে দাও, যেমনটা আমি ছিলাম, আমি জটিল হয়েছিলাম, সেতো তোমার কাছে আমার সবকিছুকে লুটিয়ে দিবো বলে। এসব দুনিয়ার তলে ঘটেনা, ঘটে যায় যেন মনে গহীন ভাবে, ওখানেই বিসর্জিত হয়ে যায় পিয়ানোয় বাজানোয় শুদ্ধতম সুর, কয়েক যুগের সুরসাধনা, লালিত কষ্টার্জিত প্যাশনকেও জলান্ঞ্জলি দিয়ে দিতে হয় সেই অস্তিত্বের তলে। এতটুকু জুয়ারী না হলে সহজ হওয়া যায়না, শিশু হওয়া যায়না, ঘরে হাসিমুখে ফেরা যায়না।
জীবনে আসাটাও যেন সাধনা, সহসা জীবনে আসা যায়না। আসার পর আবার সহসা চলে যাওয়াও যায়না। দুটোতেই সাধনা করে যেতে হয়। আবার সেই সাধনাকেই বিসর্জন দিয়ে সহজ হয়ে জীবন সৃষ্টি হয়, শিশু হয়ে; পরিশেষে সেই সহজতার সাথেই চলে যেতে হয়। আমাদের জীবন যেন এখানে নানা চড়াই, উৎরাই পেরিয়ে প্রত্যেকেই তার মত করে স্বাদ আস্বাদন করে জীবনে আসে ও চলে যায়। এভাবেই জীবনের পূর্ণতার একটা বর্তুল সমাপ্ত হয়, হয়ত আবার কোন বর্তুলের আবির্ভাবের আশায়। এইতো চলছে, সুরের মত ঐকতান ছন্দে। যে যাপন করেছে সেই তো স্থির হয়ে সেই অস্তিত্বের ডাকে সাড়া দিয়ে নিজেকে লুটিয়ে দিতে পেরেছে।
তাকেই তো অস্তিত্ব নিজে থেকে আরেকবার সুযোগ দেয় জীবনের মাঝে তার সুরের প্রতিধ্বনি প্রকাশ করে দিয়ে আসার জন্য। আমি সেসকল মানুষের পদতল স্পর্শ করি।
সম্ভবত মনে গেঁড়ে থাকা এরকমই কতগুলো ভাবনাকে যেন জীবন্তরূপে নড়াচড়া করতে দেখলাম। সেইসাথে জেনের ষাঁড়ের কথাও মনে পড়ে গেলো। ষাঁড় অনুসন্ধানে বের হয়ে ষাঁড় নিয়ে যখন বাড়ি ফিরল মানুষটি, আশেপাশের সবকিছু আগের মতই আছে কিন্তু মানুষটির মাঝে কিছু হয়ে যায় তার সব বদলে যায়। তুমি আসার আগে কী ছিলাম, এলে যখন সমস্ত চৌপায়াই উল্টে দিলে….।
অস্তিত্বের চূড়ায় মনের আকাঙ্খায় অসাধারণ কিছু পাবার বাসনা থাকে। কিন্তু এই এনিমেশন দেখার পর মনে হলো আমার মন কতই ভুল ও কত প্রকান্ড একটা বাড়ি খাবে যখন দেখবে তার বাসনায় রচিত বাড়ি খসে পড়ে যেদিন। সমস্ত অসাধারনত্ব খুঁইয়ে সে শিশুর মতই হেসে উঠে বলবে – Thank You, Life Is Beautiful and Beauty lies in Simplicity, maybe a falling leaf from a tree is more beautiful than a Ferrari Car!
অনেক অনেক বকর বকর করে ফেলেছি। আসলে আজকেই ঝরাপাতা নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিলাম, এরপর এই এনিমেশনেও একইরকম চিত্র দেখে দুটোর কম্বিনেশনে প্রবলভাবে আঘাত পাওয়ার কারণে কথাগুলো বেরিয়ে এলো। এনিমেশনটি সত্যিই চমৎকার করেছে। আপনারা দেখতে পারেন।